বার্সেলোনাকে কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ যেভাবে উড়িয়ে দিয়েছে, তাতে এ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে জার্মানদেরই ফেবারিট ধরে নিয়েছে সবাই। তবে ফাইনালে পিএসজিকে খুব একটা পিছিয়ে রাখার সাহস দেখাচ্ছেন না। কারণ, জার্মানরা সমন্বিতভাবে দুর্দান্ত হতে পারে, কিন্তু পিএসজির যে আছে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেওয়ার মতো সব খেলোয়াড়। ফলে দলীয় সমন্বয় ও একক নৈপুণ্যের লড়াইয়ের প্রদর্শনীই অপেক্ষা করছে সবার জন্য। আর একক নৈপুণ্যের কথায় সবার আগেই আসে নেইমারের নাম।
ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নিজের দিনে ভয়ংকর। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে আতালান্তা ও লাইপজিগ সেটা ভালোই টের পেয়েছে। সাবেক জার্মান মিডফিল্ডার ডিটমার হামানও মানেন এটা। কিন্তু মাঠে নেইমারের অতি মাত্রায় দেখনদারিটা একদম পছন্দ না তাঁর।
সঠিক মুহূর্তে পাস দেওয়া বা সতীর্থের জন্য জায়গা সৃষ্টি না করে স্কিলের প্রদর্শনী দেখানোর চেষ্টা কিংবা প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ফাউলের শিকার হওয়ার পর প্রতিক্রিয়াতেও খানিকটা বাড়াবাড়ি করে ফেলেন নেইমার। পিএসজি প্লেমেকারের খেলার এ দিকটা পছন্দ না হামানের। তবে মেনে নিয়েছেন, এই নেতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও বায়ার্নের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন নেইমার।
এ মৌসুমে ২৬ ম্যাচে ১৯ গোল করেছেন নেইমার। লিভারপুলের হয়ে ২০০৫ চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা হামানের ধারণা, নেইমারকে আটকানোর ক্ষমতা আছে পিএসজির, ‘পিএসজির খেলার সবচেয়ে বিরক্তিকর দিক হলো নেইমারের নাটকীয়তা। তবে মাঝমাঠে ওসব হলে বায়ার্ন সামলে নেবে। ওদের যেটা করতে হবে নেইমারকে পেনাল্টি বক্সের আশপাশে ভয়ংকর জায়গায় যেতে দেওয়া যাবে না।
টেকনিকের দিক থেকে ওই জায়গা গুলোতে সে অবিশ্বাস্য এবং আপনার সর্বনাশ করে দেবে। বায়ার্নকে প্রথমেই বুঝিয়ে দিতে হবে, আজ তোমার জন্য এসব করা এত সোজা হবে না। দলকে বড় শিরোপা এনে দিতে পারবে, নেইমারের এখনো সেটা প্রমাণ করে দেখাতে পারেনি। আমার এখনো ওর ব্যাপারে সন্দেহ দূর হয়নি।’
নেইমার ছাড়াও বায়ার্নকে চিন্তায় ফেলার মতো বহু খেলোয়াড় আছে পিএসজিতে। কোয়ার্টার ফাইনালে কিলিয়ান এমবাপ্পে মাঠে নামার পরই ম্যাচের ভাগ্য পিএসজির পক্ষে এসেছে। সেমিতে ম্যাচের আলো কেড়ে নিয়েছিলেন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে এমন ম্যাচ বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখা ফুটবলার আছে বলেই পিএসজিকে সম্মান দিচ্ছেন হামান।
তবে স্কাই স্পোর্টসের কলামে সাবেক দল বায়ার্নকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী শোনাল হামানকে, ‘এমবাপ্পেও যেন বল না পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। শুরুতেই পরিস্থিতি সামলে নিতে হবে।
তাহলেই ওদের মূল শক্তিটা কেড়ে নিতে পারবেন। তবে এমবাপ্পে ও নেইমার ছাড়া আর যার কথা ভোলা যাবে না, সে হলো ডি মারিয়া। এই আর্জেন্টাইন নিজে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারে, আর বি লাইপজিগ সেটা টের পেয়েছে। বায়ার্নের ক্ষেত্রে এটা হওয়া উচিত না।’